গল্পটা এখানেই শেষ করা যেত, আর কিছু না বলেই। কিন্তু তবু মনে হল, সুযোগ যখন আছে, কয়েকটা কথা বলেই যাই।

এই গল্পটা আমি শুনেছিলাম… না… নাম বলব না। শুনেছিলাম মৈনাকদের মধ্যেই কারোর কাছে। সবারই নাম পরিবর্তন করা হয়েছে গল্পে। যারা উত্তরবঙ্গে আমার চেয়ে অনেক বেশী ঘুরেছেন, তাদের মনে হতে পারে আমার ভূগোলের জ্ঞান বড়ই কম; কিন্তু ভুলে যাবেন না, আমার লেখার নাম “Somewhere in the Jungle of North Bengal”। বেশীরভাগ জায়গাতেই আমি আসল স্পটের নাম ব্যবহার করলেও, একটু ইচ্ছে করেই কিছু এদিক ওদিক করা আছে; লেপার্ডস নেস্ট-এর ‘রহস্য’ অটূট রাখার জন্য।

মৈনাকদের অভিজ্ঞতার সাথে সাথে আমার নিজের বারদুয়েক নর্থ বেঙ্গল যাওয়ার ঘটনা মিশিয়েই গল্পের পরিবেশ তৈরী করেছি। আর মৈণাকদের দলটা গেছিল ওঁরাওদের স্টাডী করতে; এবং সেই তথ্যের যৎকিঞ্চিত আমি ব্যবহার করেছি এই গল্পে। কারণ বাকী তথ্য, মানে যা যা পেয়েছি, সেটা থেকে আরো কত গল্প যে তৈরী করা যাবে, সেটার ইয়ত্তা নেই। তাই সেই লোভটা ছাড়তে পারিনি আর…


বলাই বাহুল্য, গল্প মাত্রই সত্য-মিথ্যার মিশেল। তাই যা শুনেছি, সেটার সাথে আমার মশলা মাখিয়েই এই গল্পের অবতারণা। তবে কয়েকটা জিনিসা না বললেই নয়; ১০০ বছরের বেশী বয়সী খগেন ওঁরাও সত্যিই ছিল; খুনিয়ার কিংবদন্তিও লোকের মুখে মুখে ফেরে। আকাশপাতাল নামের বিসদৃশ্য দাঁতওয়ালা মদ্দা হাতিও, সত্যিই ছিল। আর, মৈনাকরা ওঁরাও বস্তিতে ‘ধর্মেশ’ বা ধর্ম ঠাকুর’-এর মন্দির পেয়েছিল। এবং সেখানে বারো বছরে একটা করে নরবলি এখনো নাকি হয়ে থাকে।

আসলে এর থেকে কিছু বেশী বললে, সেটা এবার অন্য সমস্যা তৈরী করতে পারে; যাক গে। অন্য কথায় আসি। ভূত আছে না নেই, এই বিতর্ক বোধহয় সৃষ্টির অন্তিমকাল অবধি চলবে। কিন্তু আমি জানি না, ওই জঙ্গলের মধ্যে ওই পরিবেশে ক’টা দিন কাটিয়ে এলে, আমি তর্কের কোন পক্ষে থাকতাম। গল্পের শেষ তিনটে কিস্তি লেখার সময় তিন রাত না ঘুমিয়ে লিখে গেছি; পাগলের মতো। ফুটেজ খাওয়ার জন্য বলছি না; যে গরাম ঠাকুর লিখিয়েছেন; কিন্তু এই গল্পটা লেখা এবং শেষ করা আমার কাছে একটা অন্যরকমই স্মৃতি হয়ে থাকবে। জীবনের প্রথম উপন্যাসিকা বা বড়গল্প… এবং এতদিন ধরে লিখে যে শেষ করতে পারব, না ঝুলিয়ে, সেটা সত্যিই ভাবিনি; আর তাই ওই তিনরাত জেগে লেখাটা আমার সার্থক বলেই ধরছি।

এখন সবই আপনাদের হাতে; লেখা পড়ুন, মতামত জানান, গালাগাল দিন… কিন্তু পড়ুন… অবশ্যই পড়ুন।
এই শনিবার হয়তো আর একটা অপ ঘটনার আমদানী হতে পারে… কিম্বা অন্য কিছু ? দেখা যাক… শনিবারের কথা শনিবারে ভাবা যাবে…
শান্তির আশায়…
নীল…