ভাইরা মিলে রোডট্রিপ-এ, আমার দেশের বাড়িতে এখন। কাল লিখতে লিখতে ল্যাপটপের ওপর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বলে পোষ্ট করতে দেরী হল।
আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম, বোধহয় সোশ্যাল মিডিয়া আসার পর থেকে, ক্লিকবেট নিউজ-এর চক্করে খবরের কাগজগুলো রিপোর্টিং করতেই ভুলে গেছে। কতগুলো বাংলা দৈনিকের ফেবু পেজে নিউজপোষ্ট এর বহর দেখে একদিন আমি ভিড়মি খেতে খেতে সামলে নিয়েছিলাম। নিউজ টাইটেলগুলো মানে যাকে বলে ‘নট সেফ ফর ওয়ার্ক’ তাই এখানে আর ব্যক্ত করলাম না। তবে মাঝে মাঝে বেশ কিছু নিউজ দেখেছিলাম; যেমন- কোন এক সেলিব্রিটির নাতির জ্বর হয়েছে, ডাক্তার তাই প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করেছেন। খবরের হেডিং
“অমুকের নাতির জ্বর, ডাক্তার দিলেন প্যারাসিটামল”
সেই পোষ্টের নিচে, হাজার খানা কমেন্ট- আর বেশিরভাগই হল এরকম
“তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক ছোট্ট সোনা”
“আমার প্রার্থনা রইল, আমেন…”
আমার মতই কোনো এক ফ্রাস্ট্রেটেড ভদ্রলোক দেখলাম লিখেছেন,
“তোদের কি আর কাজ নেই রে হারামজাদা? কার জ্বর হল, কার হলুদ হিসু হল, এইসব লিখছিস?”
হক কথা! এসব মানে খবর আর গসিপ, এই দুটো জিনিসের মধ্যে তো আর কোনো ‘ফাইন লাইন’ নেই… আছে একটা মোটাসোটা ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ কিন্তু এনারা আজকাল দেখছি সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাঠ ময়দান করে চলেছেন সগৌরবে!

যাই হোক, এই ধরনের ক্ষোভ আমি আমার মনে বহুদিন ধরেই পোষন করে এসেছি, কারণ প্রিন্টেড নিউজও, কি এমন সুবিচার করছে? নাম করে বলব না, কিন্তু বেশকিছু কাগজ তো এক লাইন বাংলাও ঠিক করে লিখতে পারে না।
এখন প্রশ্ন হল, মানে আমার প্রশ্ন হল,
কেন?
কেন?
কেন?
কারণটা কি ?
কাদিন আগে জানলাম, কারণ হল যে সিনিয়ার রিপোর্টাররা বিদেশ ভ্রমন, এবং সেই ভ্রমনে গিয়ে রূপোর চামচ চুরি করতে ব্যাস্ত;
মানে তাই তো শুনলাম।
কোন এক বিখ্যাত বাংলা দৈনিকের রিপোর্টার আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে লন্ডন গিয়ে হোটেলে খাওয়ার সময় নাকি এভাবেই মহাবিদ্যার প্রয়োগ করে অবশেষে সি সি টিভিতে ধরে পরে গিয়ে ল্যাজে গোবরে অবস্থায় পড়েন; অবশেষে ৫০ পাউন্ড জরিমানা দিয়ে পুলিসের হাত থেকে এবারের মত নিস্কৃতি পান।
খবরটা পড়ে হাসব, না কাঁদব ভেবে পাইনি।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের ভাবমূর্তি কিভাবে কতটা ক্ষুণ্ণ হল, সেসব ভাবার আগে আমার মনে হল, মানে ভদ্রলোক ভাবলেন টা কি? যে হোটেলে রূপোর কাঁটা চামচে খেতে দেওয়া হয়, তাদের কি এটুকু ক্ষমতা নেই সেগুলো রক্ষা করার? মানে আশেপাশে ক্যামেরাগুলো নিশ্চয় শুধু লোকজনকে ভয় দেখানোর কাজে লাগে না…
যাই হোক, এই যদি ‘সিনিয়র’ রিপোর্টারদের অবস্থা হয়, তাহলে জুনিয়ারদের ভবিষ্যত ভেবে আমি শঙ্কিত। ক’দিন আগে কোন এক কাগজ নাকি হোয়াটস্যাপ-এ চালু একটা মিথ্যে গপ্পকেই ছেপে দিয়েছিল, কোনরকম যাচাই না করে, আর সে নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। আসলে, এই কাগজগুলোর মান দিনে দিনে যতই নিম্নগামী হোক, অহঙ্কার, মানে ইংরেজিতে যাকে ‘হিউব্রিস’ বলে, সেটা আছে ষোল আনা, কারণ ভুল করে, সেটা স্বীকার করাও এদের ধাতে নেই। তা এইসব কাগজের সম্পাদক, উৎপাদক, সাংবাদিক, এরা যে নিজেদের সোনার-চামচ-মুখে-দেওয়া, মানে ‘প্রিভিলেজড’ মানব সন্তান ভাববে, আর বিলিতি হোটেলের রূপোর চামচের দিকে কুনজর দেবে, এতে আর আশ্চর্য কিসের?
সুতরাং…
আর কি ?
এর পর আর কিছু লেখা যায় কি ?
মানে, আমি তো আর রিপোর্টার নই…
শান্তির আশায়,
নীল…
শেষ হয়েও… আরো সম্বৃদ্ধ কর…
LikeLike
Bhalo..
LikeLike