তরঙ্গ – প্রথম পর্ব

জনৈক নারীর মতে (পরিচয় উহ্য রইল) প্রেমের ব্যাপারে আমার মতো ‘আনাড়ি’ আর নাকি দু’টো হয় না।
কিন্তু আমি এই অভিযোগ মানতে নাচার; আর তাই একরকম জেদে পড়েই এই লেখাটা শুরু করা। তবু, আমি জানি একটা আপাদমস্তক প্রেমের গপ্পো লেখার ক্ষমতা আমারও নেই। তাই একটু অন্য ভাবে একটা প্রেমের গল্প লেখার চেষ্টা করছি।
এটা হয়তো আকারে স্তুপ বা তার থেকে একটু বড় হবে; কিন্তু ‘Somewhere in the Jungle of North Bengal’-এর
বপু ধারণ করবে না বলেই আমার বিশ্বাস…
আজ প্রথম কিস্তি। আর এই গল্পের দ্বিতীয় কিস্তির সাথে সাথে লিবারিশ-এ ১৫০ পোস্ট পূর্ণ হবে…

একটা লম্বা টানেল, আপাতদৃষ্টিতে যার কোনো শেষ পাওয়া যায় না, আর তার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে রেলের লাইন। কিছুক্ষণ দেখার পর সোমনাথের মনে হল টানেল নয়, বোধহয় মাটির নিচে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে একটা আস্ত রেললাইনকে কেউ ঢুকিয়ে দিয়েছে তার মধ্যে। তার মনে হল পাতালে কোন এক চির অন্ধকারের দেশে সে এসে পড়েছে; যেখানে আলোর চিহ্নমাত্র নেই। হঠাৎ সুড়ঙ্গের একদিকে আলোর আভাস দেখতে পায় সে, বুঝতে পারে আলোটা তার দিকেই এগিয়ে আসছে, দ্রুতবেগে, তারপরই দেখতে পায় আলোটার উৎস; আগুনের সর্বগ্রাসী লেলিহান শিখা প্রবল বেগে এগিয়ে আসছে তার দিকে; আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে সোমনাথ ছুটতে থাকে, আগুনটা স্রোতের মত তাকে পেছন থেকে তাড়া করে ধেয়ে আসে। ছুঁই ছুঁই করেও যখন শেষমেশ সেটা সোমনাথকে ছুঁতে পারে না, তখন ঘুমটা ভেঙে যায় তার।

সে শুয়ে ছিল চিৎ হয়ে। মাথার ওপর পাখাটা ঘুরছে বন বন করে। সোমনাথের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমাট বেঁধে বড় বড় ঘামের ফোঁটা তৈরী করতে শুরু করেছে। হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে কপালের ঘাম মুছে সোমনাথ পাশ ফিরে শোয়। আর পাশ ফিরেই মেঘার মুখটা দেখতে পায়। চোখ বন্ধ, দুটো হাত জোড় করে বালিশ আর গালের মাঝখানে রাখা পরম শান্তিতে ঘুমোচ্ছে মেঘা। কাল রাতের উদ্বৃত্ত কাজল এখনো চোখের কোলে রয়ে গেছে, খোলা কালো চুলগুলো গাল বেয়ে পড়েছে যেটা একটা চোখের সামনে ধোঁয়াটে একটা পর্দার সৃষ্টি করেছে।

Photo by Andrea Piacquadio on Pexels.com

ঘুমোলেও অপূর্ব লাগে মেঘাকে। এখন চোখদু’টো বন্ধ তাই… খোলা থাকলে বিয়ে করা বউয়ের চোখের দিকে চাইতেও কেমন লজ্জা লজ্জা করে সোমনাথের। সারাজীবনে, ওই চোখদুটোর চেয়ে সুন্দর কিছু আর দেখেনি সোমনাথ, কোনোদিনও না। তাই মাঝে মাঝে নিজের ভাগ্যকেও বিশ্বাস করতে অসুবিধা হয় তার। সে নিজেও জানে, মেঘার পাশে তাকে মানায় না। তাকে বিয়ে করে বোধহয় অনেক বেশী কিছু ত্যাগ করে ফেলেছে মেঘা। মেক আপ সে কোনোকালেই তেমন করত না, কিন্তু সোমনাথের যেন মনে হয় আজকাল বড্ডই কম মেক আপ করছে সে। কেন, যাতে তার পাশে বেশী সুন্দরী না লাগে ? বেমানান না লাগে ? একবার তো না থাকতে পেরে কথাটা পেড়েও ফেলেছিল সোমনাথ। জোরে হেসে উঠেছিল মেঘা; সে হাসির শব্দ পাহাড়ি ঝরণার থেকেও মিষ্টি, কানে একটা রিনরিনে বাজনার মতো বেজে যায় যেন…

-“আমাকে কখনো এর থেকে বেশী মেক আপ করতে দেখেছ ?”

-“জানি না… আমি বুঝি না… মাঝে মাঝে মনে হয়…”

-“কি ? আমি কম কম সাজছি ? কেন ?”

এর উত্তরটা দিতে পারে না সোমনাথ। কারণ উত্তরটা দিলেই মেঘার মুখে ঘনিয়ে আসবে অভিমানের কালো মেঘ; কথা বন্ধ হবে। আর চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়বে।আর সেটা সোমনাথ সহ্য করতে পারবে না একবারেই।

মনের ক্ষমতা বা সামর্থ্য কিছু হয় কিনা জানেনা সোমনাথ; জানলে বলতে পারত তার মনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে সে মেঘাকে ভালোবাসে। আর যেটা কেউ বললে বিশ্বাস করবে না, সেটা হল, প্রথম যেদিন দেখেছিল মেঘাকে, প্রথম যেদিন ওই চোখদুটোর দিকে তাকিয়ে তার হৃদয় কয়েক লহমার জন্য থমকে গেছিল, কেঁপে গেছিল তার হাঁটু, সেইদিন যতটা সুন্দর লেগেছিল, সেইদিনই যতটা ভালোবেসে ফেলেছিল, আজ সেই ভালোবাসায় একফোঁটাও খামতি হয়নি। বরং উত্তরোত্তর মনের অস্থির অস্থির পাগলামো টা বেড়েই গেছে।

সে জন্য অবশ্যই সোমনাথ সহকর্মীমহলে টোন-টিটকিরি শুনেই থাকে। ‘বউ-ন্যাওটা’, ‘বউ-হ্যাংলা’ কথাগুলো শুনে শুনে অভ্যেস হয়ে গেছে তার। কিন্তু যাদের সাথে পরিচয় কর্মক্ষেত্রেই শুরু আর শেষ, তাদের কথাই কান দিয়ে লাভ তো কিছু নেই।

আসলে ছোটবেলা থেকেই সোমনাথ বড় একা। ক্লাসের সবথেকে চুপচাপ, কথায় কথায় কেঁদে দেওয়া আর সহপাঠীদের হাতের মারধোর খাওয়া ছেলেটা ছিল সে। বন্ধু বলতে কিছু ছিল না; যারা যেচে পড়ে বন্ধুত্ব করেছে, তারা করেছে হোমওয়ার্ক আর প্র্যাকটিকাল খাতায় আঁকার স্বার্থে।

সোমনাথ সারাজীবনে সবথেকে বেশী ভালোবাসা পেয়েছে মেঘার কাছ থেকে, বন্ধু-প্রেমিকা-বউ সবক’টা খাতের ভালোবাসা মেঘা উজাড় করে দিয়েছে তাকে। তাই তাকে ভালোবেসে যদি গোটা দুনিয়ারও বিরাগভাজন হতে হয়, তো তাতে রাজী সোমনাথ। যারা তাকে নিয়ে আড়ালে হাসাহাসি করে, তারা রোজ রাতে খাবার টেবিলে তার সামনে বসে খায় না, তাদের চোখের দিকে তাকিয়ে সোমনাথের লজ্জায় মরে যেতেও ইচ্ছে করে না…

হাতঘড়িতে সময় দেখাচ্ছে সকাল ছ’টা। মোবাইলে সওয়া ছ’টায় অ্যালার্ম দেওয়া আছে; আগে থেকেই সেটা বন্ধ করে উঠে পড়ে সে। দু’জনেরই অফিস আছে; এখন স্বামী-স্ত্রীর সংসারে দু’জনে হাত না লাগালে সংসার সামলানো মুশকিল; এখন কলকাতায় কাজের লোকের অভাব এবং দু’জনের রোজগার নেহাত মন্দ না হলেও, কাজের লোককে অতগুলো টাকা দেওয়াটা কেমন গায়ে লাগে। তাই যত্ন করে সাজানো এই দুই-কামরার ফ্ল্যাটটা দু’জনে নিজে হাতেই দেখভাল করে থাকে। তাই সকালে উঠে ঘর পরিষ্কার করে এবং দুপুরের খাবার রান্না করে আটটা নাগাদ স্নানে যায় সোমনাথ। আর স্নান সেরে বেরিয়ে দেখে, জলখাবার তৈরী করে বিছানা তুলে স্নানে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছে মেঘা। ঠিক সকাল ন’টায় দু’জনে রাস্তায় নামে। সোমনাথ যাবে পার্ক স্ট্রীটে, রেল ভবন আর মেঘা যাবে সেক্টর ফাইভ। তাদের ফ্ল্যাট কালীঘাটের একটু ভেতরে; রাসবিহারী থেকে তার অফিস যাওয়ার একটাই এ সি বাস এছাড়া সোজা রাস্তা আর কিছু নেই; মেঘার সুবিধা হল, ওর এ সি শাটল বুক করা আছে; সেটাই তাকে নিয়ে যায় এবং ছেড়ে দিয়ে যায় রাতে।

ঘর পরিষ্কার করে রান্না চাপিয়েছে কি চাপায়নি, এমন সময় মেঘা পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তাকে…

-“আমাকে ডাকলে না কেন ?”

-“আরে! আমি তো কিছুক্ষণ হল উঠলাম। তুমি কাল কত রাত অবধি ব্যস্ত ছিলে, শুতে দেরী তাই আর ডাকিনি…”

মেঘার মুখটা একটু দুখী দুখী হয়ে যায় এ কথায়।

-“তোমায় আমি একদম সময় দিচ্ছি না, তাই না সমু ? আসলে এই নতুন ক্লায়েন্ট নিয় এত চাপ; আমি আসলে…”

সোমনাথ মেঘার ঠোঁটে একটা আঙ্গুল দিয়ে তাকে চুপ করায়।

-“একদম না… কাজটা জরুরী তো ? তুমি কি ইচ্ছে করে কাজের বাহানা করছ ? তা তো নয়; তাহলে এত চিন্তা করছ কেন ? তোমার কাজের চাপ আমার থেকে অনেক বেশী; তাই এরকম সময় তো মাঝে মাঝে আসবেই, তাই না ? কুছ পরোয়া নেহী… তোমার চাপ একটু কমুক… আমরা একটা ভালো কোথাও ডিনার করে আসব একদিন…”

মেঘা আধভাঙা ঘুম চোখে নিয়ে একটা হাসি হাসে, তারপর সোমনাথের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়ে একটা গভীর চুমু খেয়ে বলে;

-“আর কিছু খাবে ব্রেকফাস্ট-এ ?”

এইসব মুহূর্তগুলোতে সোমনাথ কেমন বিহ্বল হয়ে পড়ে; সে কোনও উত্তরই দিতে পারে না। মেঘা খিলখিল করে হেসে ওঠে…

-“ভোঁদু কোথাকার… যাও রান্না কর…”          

আবার রান্নায় মন দেয় সোমনাথ। মনে মনে হেসে ফেলে… জীবনে ভালোবাসার কমতি তার নেই; সত্যি বলতে জীবনধারণের কোনও কষ্টই নেই তাদের। কষ্ট অন্য জায়গায় আছে, আর সেটা মেঘার জীবনে। মেঘার বাবা আপত্তি করেছিলেন তাদের বিয়েতে। কুলীন ব্রাহ্মণ হয়ে তিনি কখনই বদ্যির ছেলের হাতে নিজের মেয়েকে তুলে দিতে রাজি হননি। তাই বাবার অমতে গিয়ে, এক কাপড়ে তার সাথে ঘর ছাড়ে মেঘা। সেই থেকে বাবা মেয়ের আর মুখ দেখেননি। মেঘার মা মাঝে মাঝে ফোন করেন; বলেন আসতে। কিন্তু মেঘা তাঁকে বার বার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যে বাড়িতে তার স্বামীকে অপমানিত হতে হয়েছে সেই বাড়িতে সে আর যাবে না, যতদিন না বাবা নিজের এসে তাদের নিয়ে যাবেন।

সোমনাথের বাবা মা যখন মারা গেছেন, তখন অনেক ছোট সোমনাথ। একমাত্র কাকা আর কাকীমা বুকে তুলে নিয়ে সন্তান্সনেহেই মানুষ করেছেন তাকে। ছোটবেলা থেকে মেধাবী সোমনাথের পেছনে উচ্চমাধ্যমিকের পর থেকে আর একটা পয়সা খরচ করতে হয়নি কাকাকে; স্কলারশিপ এবং গভার্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার দরুন নামমাত্র খরচায় বি টেক কমপ্লিট করে আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি তাকে। মাথা ছোটবেলা থেকেই পরিষ্কার, তাই প্রথমে নীচু পদে ঢুকেও খুব তাড়াতাড়ি রেলের উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়ারের পদে আসীন হয়। 

মেঘাও ততদিনে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত। কলেজ জীবনের প্রেমের অধিকারেই তাই মেঘা হাত ধরে টানতে টানতে সোমনাথকে তার বাড়ি নিয়ে গেছিল। সেই প্রথম, সেই শেষ বার। মেঘার যে কতটা একরোখা, জেদী মেয়ে সেটা সেইদিনই বুঝতে পেরেছিল সোমনাথ। মেঘার বাবার কথায় যখন সোমনাথের মুখ লাল হয়ে যাচ্ছিল; তখন মেঘা তার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে নিজের ঘরে ঢোকে, কারোর কথায় কান না দিয়ে। আলমারি থেকে একটা ফাইল বের করে আবার বাবার সামনে গিয়ে বলে;

-“তোমার ওই বস্তাপচা ভাবনা নিয়ে তুমি থাকো, বাবা… আমি চললাম। আমার সমস্ত মার্ক শিট, আর ডকুমেন্ট নিয়ে গেলাম। আর আসব না…”

সোমনাথ কিছু বলার আগেই তাকে আবার টানতে টানতে সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল মেঘা। ট্যাক্সিতে ওঠা অবধি একটা টুঁ শব্দও করেনি, কিন্তু ওঠার পর তাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠেছিল।

আজ হঠাৎ করে সকাল থেকে সব কথা কেন মনে পড়ে যাচ্ছে সোমনাথের কে জানে! রান্না, স্নান সেরে এসে সোমনাথ দেখে প্রাতরাশ সাজিয়ে টেবলে তার জন্য অপেক্ষা করছে মেঘা, দুপুরের খাবারও টিফিন বাক্সয় ভরে তৈরী।

-“আজ আমার একটু দেরী হতে পারে, বুঝলে… ক্লায়েন্ট মিটিং আছে।“

-“হ্যাঁ, ঠিক আছে… আমি অফিস থেকে বেরিয়ে ফোন করে নেব।“

-“হ্যাঁ, ফোনে না পেলে বুঝে নিও মিটিং-এ আছি। আর বাড়ি ফিরে সব কাজ একা করে ফেল না, আমার জন্য রেখ। রুটিটা তো করতে শেখো নি, ওটা আমিই না হয় করব ফিরে…”

-“কি ? এতবড় অপমান ? আমি রুটি করতে পারি না ?”

-“হ্যাঁ, আমার ওই চৌকো রুটি খাওয়ার কোনো শখ নেই…”

-“এরম বললে তো ? না হয় পুরো গোল হয় না… তা বলে চৌকো ?”

এবার হেসে ফেলে দু’জনেই।

ঠিক ঘড়ি ধরে সকাল ৯ টার সময় রাস্তায় নামে দু’জনে। প্রথমে হেঁটে রাসবিহারী, তারপর একজন বাসের জন্য অপেক্ষা করবে, আর অন্যজন উঠবে শাটেলে।

সোমনাথের বাসটাই আগে এল। সে উঠে বসল। বাসের রুট একটাই, কিন্তু বাসের সংখ্যা প্রচুর বলে একেবারেই ফাঁকা থাকে বাসগুলো। সোমনাথ জানলার ধারে একটা সিটে আরাম করে বসে।

আজ মেঘার ফিরতে দেরী হবে। ভালোই হল। বড্ড খাটনি যাচ্ছে ওর, আজ বরং অফিস থেকে বেরিয়ে কিছু খাবার প্যাক করে নেবে সোমনাথ। খাটনিও কমবে, মেঘা খুশিও হয়ে যাবে। এসব ভাবতে ভাবতে ফোন ঘাঁটছিল সে। ফোন থেকে মুখটা তুলেই, তার ভ্রুটা কুঁচকে গেল। রাস্তার এই জায়গাটা এরকম ফাঁকা ফাঁকা লাগছে কেন আজ ? এই রাস্তা দিয়েই তো সে রোজই অফিস যায়। কিন্তু এরকম তো কোনোদিন মনে হয়নি। মানে কালই তো গেছিল অফিস। কাল এরকম ছিল রাস্তাটা ? না… অনেক ভেবেও মনে করতে পারে না সোমনাথ। রাস্তায় কিন্তু অস্বাভাবিক কিছু নেই; একটা দোকান, রাস্তার ধারে একটা স্মৃতিসৌধ; এগুলো রোজই দেখতে পায় সে; কিন্তু আজ বার বার মনে হচ্ছে, রাস্তায় এই জায়গাটায় কি একটা ছিল যেটা আজ আর নেই।

মনটা খুঁতখুঁত করতে থাকে, সোমনাথের। আর সেটা আরো বেড়ে যায় অফিস পৌছোতে পৌছোতে। বাকী রাস্তার আরো কয়েকটা জায়গা দেখে তার মনে হয় এই জায়গাগুলো তেও কিছু ছিল, যেটা আজ আর নেই। এইসব চিন্তা মাথায় নিয়েই সে অফিসে ঢোকে। এমনিতেই রাস্তাঘাটে যাতায়াত করার সময় সে ফালতু এদিক ওদিক তাকিয়ে সময় নষ্ট করে না, আর আজ তো এমনিতেই এইসব হাবিজাবি চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই সে একবারও খেয়াল করল না, একটা লোক, যে রাসবিহারী থেকে তার বাসে উঠে তার পেছনের সীটেই বসে তাকে লক্ষ্য করে গেছে গোটা রাস্তা, আর তার পেছন পেছন এসেছে তার অফিসের দরজা অবধি। এবং সে অফিসের ভেতর ঢুকে যাওয় অবধি সেখানে অপেক্ষা করেছে, আর তারও কিছুক্ষণ পর চুপচাপ চলে গেছে।  

কেমন হচ্ছে ? বেশী ন্যাকা ন্যাকা প্রেম মনে হচ্ছে কি ? হতে পারে… তবে এ তো সবে প্রথম পর্ব… কলির সন্ধ্যে ঘনিয়ে রাত হতে বেশী দেরী নেই… সামনের পর্বগুলো আসতে দিন… আশা করছি, নিরাশ করব না…

নীল…

Advertisement

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.