কিউরিও

বলাই বাহুল্য, এই গল্পের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক, কোন কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দেওয়া, বা কোনো মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য নয়। তাই আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিলুম, যদি মনের অজান্তে এরকম কিছু করে ফেলি।

সিদ্ধার্থ কফির কাপে চুমুক দিয়ে একটা সিগারেট ধরানোর প্রস্তুতি নিল। অভিষেক দেশলাইটা বের করে একটা কাঠি জ্বালিয়ে ধরল তার জন্য।

-“নাহ… এ বৃষ্টি ছাড়ার কোনও নাম নিচ্ছে না। বাপের জন্মে দেখেছিস; মিড ডিসেম্বরে এরকম ধুন্ধুমার বৃষ্টি পড়তে ?”

কথাটা বলে সুনীল একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তার কথায় সায় দিতে মাথা নেড়ে রফিক বলে ওঠে;

-“আমাদের ছোটবেলায় এত নিম্নচাপ হত বলে তো মনে হয় না।“

সবাই মৃদু হেসে ওঠে। সিদ্ধার্থর বাড়িতে তাদের ফি-মাসের এই সান্ধ্য আড্ডাটা আজ জমজমাট হওয়ার মত পরিবেশ ছিল পুরোপুরিই। এবারে ঠান্ডাটা পড়েছে বেশ, আর তার ওপর গত দু’দিন ধরে বেদম বৃষ্টি। কিন্তু তাদের আড্ডার পঞ্চম সদস্য এখনো অনুপস্থিত, তাই ষোলকলাটা পূর্ণ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। পাঁচ স্কুলের বন্ধুর এই আড্ডা তাদের একঘেয়ে চাকরিক্ষেত্রের বাইরে একটা বিরাট স্বাধীনতার জায়গা। সেই স্কুলের প্রগল্ভতা, হাসিঠাট্টা সবই যেন এক এক করে ফিরে আসে এই কয়েক ঘন্টায়।

কিন্তু আজ সমরেশ বড্ড দেরী করছে। সবাই ৬ টার মধ্যে এসে গেছে, বৃষ্টি মাথায় করেও; কিন্তু ঘড়ির কাঁটা আটটার ঘরে উঁকি দিলেও, সমরেশ এর পাত্তা নেই।

-“না, ভাই, আমাকে এবার উঠতে হচ্ছে। একটু আগে বেরোলে বৃষ্টিটা এড়াতে পারব। ওলা-উবের তো দূষ্প্রাপ্য এবং দূর্মূল্য, দুটোই হয়ে উঠেছে…”

অভিষেক একটি বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রের সিনিয়র জার্নালিস্ট, আর বন্ধুমহলে তার ডাকনাম হচ্ছে রাতজাগা তারা। আজ বৃষ্টির দিনে সে বাইক বের করেনি।

-“তোকে কতবার বলেছি, একটা গাড়ি কেন এবার। আর কতদিন এভাবে চালাবি ?”

-“আরে ভাই। কোথায় থাকি দেখ ! ত্রিসীমানায় কোনো চারচাকা রাখার জায়গা নেই। যাও বা পাওয়া যাচ্ছে, তার থেকে আমার গাড়ির ই এম আই কম পড়বে।”

সরকারী চাকুরে রফিক এবার বলে ওঠে।

-“আরে বাবা, ওসব থাক। কিন্তু সমরেশ আসবে বলেছিল তো ? ওকে ফোন কর না সিধু…”

-“ফোন তো বাবুর সুইচড ওফ। ইটালি গেছিল না ? ওখান থেকে তো আজই ফিরল। আমাকে হোয়াটস্যাপ এ বলল, এয়ারপোর্ট থেকে নেমে বাড়ি গিয়ে লাগেজ রেখেই চলে আসবে।”

-“একবার তনয়াকে ট্রাই করে দেখ না…” -সুনীল উপদেশ দেয়। এবং কথাটা যথাযথ মনে হওয়ায়, সিদ্ধার্থ টেবল থেকে ফোনটা তুলে সমরেশের স্ত্রী তনয়ার নাম্বারে ডায়াল করে।

ওপাশ থেকে সাড়া আসার পর জানা যায় সমরেশ নাকি বাড়ি এসেই হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে গেছে। প্রায় আধঘন্টা আগে।

-“তার মানে বৃষ্টিতে ফেঁসেছে… আজ আর আসতে পারবে বলে তো মনে হয় না… আমি উঠি ভাই…”

এই বলে অভিষেক ওঠার তোড়জোড় করে। সে ফোনটা হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে অবিন্যস্ত জামাকাপড় ঠিক করার প্রস্তুতি নিতেই কর্কশ শব্দে কলিংবেল-এর আওয়াজে সবার চোখ পড়ে দরজার দিকে;

-“ওই এসেছে…” -এই বলে সিদ্ধার্থ দরজা খুলতেই, দেখল দাঁড়িয়ে সমরেশ।

-“বলছি স্যার, ভেতরে আসব ?”

-“আর ন্যাকামো করতে হবে না, আয়…”

 হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকে এল সমরেশ। কাঁধে ব্যাগ, মুখে একটা হাসি।

-“বুওনা সেরাআমিচি মিয়েই…” -বলে সে অদৃশ্য টুপি খোলার ভঙ্গি করে সোফার খালি জায়গাটায় বসে পড়ে।

রফিক একটু ঝাঁঝিয়েই ওঠে…

-“শালা এতো দেরী করে এসে আবার ইতালিয়ান কপচানো হচ্ছে ???”

-“চোটো না বন্ধু, চোটো না… প্লেন ল্যান্ড করা মাত্র ব্যাগভর্তি লাগেজ আর জেটল্যাগ নিয়েও এখানে এসেছি ছুটে। এসে আবার দেখি অভি হারামজাদা যাচ্ছে উঠে…”

-“আবার কাব্যি করছিস ? তোকে…” অভিষেককে কথাটা শেষ না করতে দিয়েই দু’হাত তুলে সমরেশ বলে ওঠে,

-“ক্ষমা ! ক্ষমা বন্ধু, ক্ষমা ক্ষমা ক্ষমা… কিন্তু উঠে গেলে বিরাট একটা জিনিস মিস করতে… মানে বাসী হয়ে যেত।”

কৌতুহলী হয়ে অভিষেক বসে পড়ে। শুধু সে নয়, কৌতুহলটা সবার চোখেই দেখা যায়।

-“তোকে একটু কফি দিই ?” – প্রশ্ন করে সিদ্ধার্থ। জোরে জোরে মাথা নেড়ে নিষেধ করে সমরেশ বলতে শুরু করে…

-“দেখ ভাই, যতবারই কোম্পানির কাজে দেশের বাইরে গেছি, ততবারই তোদের জন্য কিছু না কিছু এনেছি। তা, এবারের একটা জিনিস কিন্তু একেবারেই অভিনব…”

-“জিনিসটা কি ?”

একটা দুষ্টুমি মেশানো হাসি হেসে, সমরেশ তার ভুরুটা নাচিয়ে বলল,

-“ভূতের গপ্পো…”

-“ভূতের গপ্পো ? ইতালিতে গিয়ে ভূত দেখে এলি নাকি ভাই ?” – অবাক গলায় প্রশ্ন করে সুনীল।

-“কতকটা তাই ধরতে পারিস…”

-“কতকটা মানে ? পুরোটা না ?”

-“রোসো…”

এই বলে সমরেশ ব্যাগের চেইনটা খুলে একটা কাপড়ের বড়সড় মোড়ক বের করল, আর সেটা কফি টেবলে রেখে খুলতে বেরিয়ে পড়ল একটা চামড়ায় বাঁধানো মোটা বই। তার ওপর কতগুলো অদ্ভূত ধরনের চিহ্ন। আর ওপরে অজানা ভাষায় লেখা একটা নাম।

-“চেচিদিত লিব্রো… ল্যাটিন… যেটার ইংরেজী তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘Book of the Fallen’ “

-“তা এটা কি সেই ভূতের গল্পের বই, নাকি ? দাঁড়া দাঁড়া… তুই আজকাল ভূতের গল্পের বই, কিউরিও ভেবে কিনছিস নাকি ?”

এবার বেশ শব্দ করে হেসে ওঠে সমরেশ। তার কিউরিও সংগ্রহের শখের জন্য, তাকে প্রায়শই বন্ধুদের টিটকিরি শুনতে হয়। মাঝে মাঝেই হিন্দি শব্দ বলে ফেলা রফিক তার নাম দিয়েছে ‘কাবারীওয়ালা’। হাসি থামিয়ে সে আবার বলল,

-“না ভাই না, বইটা কিউরিও হিসাবেই কিনেছিলাম। কিন্তু এটা পড়ার পর যা বুঝলাম, সেটাতে চক্ষু চরকগাছ হয়ে গেল। মানে বইটি দাবী করছে, এতে কিছু আসল ঘটনার উল্লেখ আছে, কিন্তু এরকম ঘটনা আমি কখনো কোত্থাও শুনিনি।“

-“তা সেটা ঝেড়ে কাশলে হয় না ?” -অভিষেক বলে।

-“হ্যাঁ, সেটাই বলছি। আগে বলুন তো, রফিক সাহেব, ‘লামিয়া’ বা ‘স্ট্রিগোই’ কথার অর্থ কি ?”

রফিকের ভ্রু কুঁচকে যায়। সে কয়েক সেকেন্ড ভাবার জন্য চুপ করামাত্রই, হঠাৎ সুনীল বেশ উত্তেজিত হয়ে লাফিয়ে উঠে বলে;

-“আমি এটা জানি… আরে এ দু’টো শব্দের অর্থ তো এক, ভ্যাম্পায়ার !”

-“ইচেলেন্তে ! আমার পরের প্রশ্ন কিন্তু অধ্যাপক মশাই, আপনার জন্যেই… একটু বলুন তো, হোলি গ্রেইল কি, আর জুডাস কে ?”

-“এ তো খুবই সোজা প্রশ্ন। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকের ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্যা লাস্ট ক্রুসেড এবং তারপর ড্যান ব্রাউনের ডা ভিঞ্চি কোডের পর, হোলি গ্রেইল শব্দটা তো বহুল প্রচারিত। মানে বলা হয় যীশুখ্রিষ্টের লাস্ট সাপার-এ ব্যবহূত পানপাত্র, যাতে তিনি ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁর রক্ত ধরে রাখা হয়, তাই হল হোলি গ্রেইল। এবার সেটা নিয়ে নানান মিথ প্রচারিত, যেমন সেটাতে জল পান করলে অনন্ত যৌবন লাভ করা যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি।“

-“আর জুডাস ?”

-“লাস্ট সাপারের ১৩ নম্বর অংশগ্রহনকারী। ১৩ সংখ্যাটাকে সভ্যতার ইতিহাসে কালিমালিপ্ত করা জুডাস ইসক্যারিওট, যিনি কিনা ১৩ টুকরো রূপো, মানে 13 pieces of Silver এর জন্য যীশুর বিশ্বাসঘাতকতা করেন। কিন্তু যীশু ধরা পড়লে নাকি তার প্রচন্ড বিবেকদংশন হয়, আর তিনি যীশুকে বাঁচানোর চেষ্টা করে, না পেরে শেষে গলায় দড়ি আত্মহত্যা করেন।”

-“ব্রাভো…”

-“আসলে আমার বইটা শুরু হয় ঠিক ক্রুশিফিক্সনের আগের রাত থেকে। বইতে বলা হয় জুডাস ছিল প্রচন্ড ধূর্ত এবং ক্ষমতালোভী। তবে রাজনৈতিক ক্ষমতা নয়, তার জীবনের লক্ষ্য ছিল একটাই। অমরত্ব।”

-“বটে ! এ কথা লিখেছে নাকি ?” -বলে ওঠে সুনীল।

-“একবার পড়ে দেখবি নাকি ?”

-“মাফ কর ভাই, ইতিহাস পড়াই বলে কি তোমার মত ১২টা ভাষায় ব্যুৎপত্তি হবে আমার ? তুমি বল, আমরা শুনছি।”

একটু হেসে উঠে, আবার শুরু করে সমরেশ।

-“তা ক্রুশিফিক্সনের আগের দিন, এ হেন জুডাসের সাথে দেখা হয় এক সীয়র, মানে জ্যোতিষীর। সে বলে ভগবানের সন্তান, মানে যীশুর ক্রুশে মৃত্যু হলে, এবং তাঁরই পানপাত্রে যদি কেউ তার রক্ত পান করে, তাহলেই তাঁর অমরত্ব প্রাপ্তি হবে। এরপরও, ‘কিন্তু’ বলে সেই জ্যোতিষী কিছু বলতে যায়, কিন্তু আহ্লাদে আটখানা জুডাস সে খবর না শুনেই, প্রায় নাচতে নাচতে ছোটে গভর্নর পন্টিয়াসের কাছে। তার পরের ঘটনা মোটামুটি সবার জানা; মানে যীশুকে ভীড়ের মধ্যে চুমু খেয়ে রোমানদের কাছে কিভাবে ধরিয়ে দেয় জুডাস।”

-“তাহলে আলাদাটা কি হল ?”

-“আলাদাটা এটাই হল, যখন যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়, জুডাস হোলি গ্রেইলটি সংগ্রহ করে এবং, যীশুর রক্ত পান করে। সঙ্গে সঙ্গে তার প্রচন্ড তৃষ্ণা পায়। কোমরের ১৩টি রূপোর মুদ্রা এবং সূর্য্যের আলো তার চামড়া পুড়িয়ে দিতে থাকে। সেই বুকফাটা পিপাসা নিবারণ সে জল, সুরা, কিছু দিয়েই করতে পারে না। শেষে সে তার এক প্রতিবেশীকে হত্যা করে এবং তার রক্ত পান করে। সে হয়ে ওঠে পৃথিবীর প্রথম ‘লামিয়া’।

-“মানে জুডাস, পৃথিবীর প্রথম ভ্যাম্পায়ার ? কিন্তু তারপর ? তারপর কি হয় ?”  -এবার কৌতুহলী রফিক।

-“তারপর ? তারপর অনেক লোকমৃত্যুর পর, রোমানরা জুডাসকে ধরে, তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে রূপোর বাক্সে বন্দি করে কোনো এক গোপন স্থানে পুঁতে ফেলে। তবে…”

-“তবে কি ?”

-“তবে, এই বই অনুযায়ী, জুডাসের আত্মার কোনো মৃত্যু নেই। হোলি গ্রেলের সাথেই তার যোগ। হোলি গ্রেইল থেকে কেউ ভুলেও কিছু পান করলে, তার দেহেই প্রবেশ করবে জুডাসের আত্মা। সেটা কোনো রোমানিয়ান কাউন্ট হতে পারে, বা কোনো রাশিয়ান এরিস্টোক্র্যাট। আর তার স্মৃতির ভান্ডারে যোগ হবে, জুডাসের সব ধারিত দেহের স্মৃতি। সেই খৃষ্টজন্মের পরের থেকে।”

-“আর সে দেহ ধবংস হয়ে গেলে ?”

-“আত্মা তো বিদেহী। তাঁকে মারার উপায় তো নেই। তবে, এক্ষেত্রে আছে একটা। আবার প্রশ্ন, ‘স্পীয়ার অফ লঞ্জাইনাস’ কি বস্তু ?”

গল্পের নেশায় মগ্ন সুনীল উত্তর দেয়;

-“আরে বাবা, ওই তো, যে বর্শা দিয়ে ক্রুশবিদ্ধ যীশুকে আঘাত করা হয়, এর আরো নাম আছে, যেমন হোলি ল্যান্স বা স্পীয়ার ওফ ডেসটিনি।”

-“দেহধারী জুডাসের বুকে ওই বর্শা প্রবেশ করালে, তবেই তার মুক্তি।”

-“তার মানে, ভ্যাম্পায়ার একজনই ?”

-“উঁহু… জুডাস চাইলে, অনেককেই নীজের আজ্ঞাবহ রক্তপায়ী পিশাচে রূপান্তরিত করতে পারে। কিন্তু আত্মা একজনেরই। বাকী সবাই তার ইশারায় নাচা রক্তমাংসের পুতুল।”

-“মানে হাইভ-মাইন্ডেড বিয়িংস…” এবার গম্ভীর গলায় বলে ওঠে রফিক।

-“এজাতামেইন্তে !!!”

-“বাহ ! আরে ভাই এ তো একেবারে আনকোরা অরিজিন স্টোরী ! ভালো করে লিখতে পারলে তো পাবলিশিং হাউসগুলো লুফে নেবে। কিন্তু একটা জরুরী প্রশ্ন, বইটা লেখা কার ?” – প্রশ্ন করে সিদ্ধার্থ।

-“অগাস্টাস ভ্যান হেলাডিয়াস…”

-“এ নামটাও তো দেখি কেমন আব্রাহাম ভ্যান হেলসিং-এর মত শুনতে !”

কিছু না বলে মুচকি হাসল আবার সমরেশ।

-“যাক, বেশ অন্য ধরনের একটা কিউরিও তোর কপালে জুটল তাহলে…” – অভিষেক মুখ খোলে।

-“না ভাই, এটা ঠিক কিউরিও নয়… সেটা আর একটা জিনিস…”

-“আর একটা জিনিস মানে ? আবার কি এনেছিস…”

এ কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ব্যাগ থেকে একটা মখমলের ছোট থলি বের করে আনে সমরেশ। আর সেটার থেকে একটা পুরোনো পানপাত্র বের করে রাখে টেবলে। চার বন্ধু সেদিনে অবাক হয়ে চেয়ে দেখে।

প্রায় দশ মিনিট পর, দরজা খুলে বেরোয় সমরেশ। অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে। ভালো। পড়া ভালো। জামার বুকে লেগে থাকা চাপ চাপ রক্তটা ধুয়ে যাবে তাতে। নীজের স্ত্রীর রক্ত পান করার আগেই এসেছিল ফোনটা। তার কথা মত মিথ্যে বলে তনয়া ফোনটা রাখার পর তার স্বামীর অদ্ভূত ব্যবহারের কারণ জিজ্ঞাসা করার জন্য উল্টোদিকে ঘুরতেও পারেনি। নিজের বাড়ির চৌকাঠ পেরোনোর আগে স্ত্রীর আনুমতি নিতে হয়েছিল। কারণ নিমন্ত্রন ছাড়া জুডাসের মত বিশ্বাসঘাতককে কেউ বাড়িতে ডাকে না। বৃষ্টির তোড়ে ভিজে যাচ্ছে সবকিছু। ভিজে যাচ্ছে পিঠের ব্যাগ, ব্যাগে রাখা চেচিদিত লিব্রে। ভিজুক। গত দু’হাজার বছরে যে বই কেউ ধ্বংস করতে পারেনি, সামান্য বৃষ্টিতে তার কিছু হবে না। আর কাউকে ভয় পায় না সমরেশ। স্পীয়ার অফ ডেস্টিনি রয়েছে ভিয়েনার জাদুঘরে। তার অবধি সেটা পৌছোনোর কোনো সম্ভাবনাই নেই। শুধু আছে তার দেহ, আর যুগ যুগ ধরে তৃষ্ণার্ত জুডাসের আত্মা।   

ভাল লাগল ? নাকি তারাহুড়োতে একটা খাজা গল্প শোনালাম। কমেন্ট-এ জানান। মেইল করুন, পায়রা পাঠান। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

ইতি,

নীল…

4 thoughts on “কিউরিও

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.