না, ব্যাপারটা নিয়ে একটু সিরিয়াসলি ভাবুন। আমি আগেই বলেছি, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক আসা ইস্তক, যে কোনো বিষয়ের দু’টি দিক খুঁজে পাওয়া যায়। আর আমি যে ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতে চাইছি, সেটাতে মেরুকরণের জায়গা আছে প্রচন্ড।
কথা হচ্ছে রাণী রাসমণির চরিত্রাভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়কে নিয়ে। সবার আগে আমি বলতে চাই, আমি রাণী রাসমণির একটা এপিসোডও দেখিনি; মানে দেখার সাহস হয়নি আরকি… তা এই মেয়েটির অভিনয়ক্ষমতা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। কিন্তু ট্রোলিং এর কথা বলতে এসেছি যখন, প্রথম থেকে শুরু করি…
‘রোক্কে কর রঘুবীর…’
‘বাবা মতুর তুমি এয়েচ ?’
রাণী রাসমণির এই দু’টো ডায়ালগ নিয়ে প্রচুর মীম, ট্রোলিং হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি স্বয়ং জনি সিন্স কে টেনে এনে ‘বাবা জনি তুমি এয়েচ’… অনেক অনেক খোরাক হয়েছে। তারপর রাণী রাসমণি রূপে দিতিপ্রিয়া সাংবাদিক সম্মেলন করে নাকি কান্না গেয়ে বলল, ‘এই যে নোংরা ট্রোলিং হচ্ছে… নোংরা নোংরা মীম…’
নোংরা? কেন? নীরব মোদীর বদলে জনি সিন্সকে টেনেছে বলে? আজব তো!
প্রথমত, মীম বা ট্রোলিং, দু’টোই ওকে নিয়ে যা করা হয়েছে, সবটাই মজার ছলে। মীম এর অর্থই তাই। মজার ছলে লেগ পুলিং, কিন্তু, সাংবাদিক সম্মেলন শুনে মনে হল, যেন প্রাণনাশের হুমকি এসেছে বাড়িতে।
দ্বিতীয়ত, একটা সহজ কথা লোকে বুঝতে বড্ড ভুল করে; একটা বিজ্ঞাপন নোংরা হতে পারে, একটা আইটেম সং অশ্লীল হতে পারে। কিন্তু পর্ণ/পানু/ব্লু-ফিল্ম, কখনোই, নোংরা বা অশ্লীল নয়।
কারণ, সবার আগেই বলে দেওয়া হচ্ছে, ‘এটা পর্ণোগ্রাফি’ এখানে ক্যামেরার রেকর্ড করা, নগ্ন যৌনদৃশ্য দেখানো হচ্ছে। এবার আমার কথাটা যারা বুঝলেন না, আমি মনে করি তারা একটা নোংরা নর্দমা দেখে, সেটাতে স্বেচ্ছায় নেমে তারপর বলেন- ‘ইসসসস কি নোংরা !!!’
এবার একটা কথা বলি। আমরা, একটা সিনেমা দেখে এসে, সমালোচনা, মজা করি তো? করি না? আমি টিকিট কেটে, (এখন ১৫০-২০০ এর কমে টিকিটও হয় না) আমার জীবনে ২-৩ ঘন্টা বরবাদ করে, একটা সিনেমা দেখে এলাম। সেটা আমার ভালো না লাগলে, আমি সেটার সমালোচনা করতে পারব না? সেটা নিয়ে ইয়ার্কি মারতে পারব না?
তাহলে টিভির ব্যাপারে সেটা হবে না কেন? যেখানে সিনেমা দেখাটা পুরোপুরি আমার সিদ্ধান্ত, কোনটা দেখব আর কোনটা দেখব না, সেটা পুরোপুরি আমার ব্যাপার। যেখানে আমি মাসে মাসে হি-জি-বি-জি বাংলার মতো চ্যানেলের জন্য কেবল অপারেটর কে টাকা দিচ্ছি, সেখানে তো আমার হাতেও নেই তারা আমাকে কি দেখাবেন… তা আমি সেটার খিল্লি ওড়াতে পারবা না?

আর যেখানে মেয়েটির উচ্চারণ বা ‘ডিকসন’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সেখানে মনে রাখতে হবে, ক্রিস্টোফার ওয়াকেন থেকে শন কোনারি সবাইকেই হাসির খোরাক হতে হয়েছে, যুগে যুগে। তুমি কোন ক্ষেতের মুলো, বাছা ?
এবার আসি পরের কথায়। দিতিপ্রিয়া কোন এক মাচায় গান গেয়েছে(?)। তাও একটা না, তিন-তিনটে গানের পিন্ডি চটকে মা-মাসি এক করে দিয়েছে। আর এরপর ট্রোল হওয়াতে তাঁর বক্তব্য, তাঁকে লোকে শুধু ট্রোল করার ছুতো খোঁজে। তা এ ব্যাপারে আমার অনেএএক কিছু বলার আছে।
প্রথমে বলি, আমার গানের ভিডিও শুনে প্রচন্ড হাসি পেয়েছে। মানে ‘ভসভসিয়ে সোডার মতন পেট থেকে’।
তারপর… দেখলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থনেরও অভাব নেই। ‘বাচ্চা মেয়ে, চেষ্টা করেছে’… ‘শিশুশিল্পী তো, তাই…’
শিশু? শিল্পী ? শালা ইয়ার্কি হচ্ছে ? গলায় সুরের মা-বাপ নেই, সে শিল্পী? তাহলে মান্না দে এতদিন বনগাঁ লোকালে বাদাম বেচতেন। ‘চেষ্টা করছে’ – করুক না! নিজের বাড়িতে দরজা জানলা বন্ধ করে করুক, যাতে ভদ্র সমাজের কারোর কানে সেটা না যায়। মিটে গেল। শুনেছিলাম পাহাড়ি সান্ন্যাল নাকি স্বয়ং ভীমসেন যোশীকে বলেছিলেন ‘তোমার মোষের বাচ্চার মত গলা’। তারপর একদিন গলা শুনে সেই ভীমসেনকে চিনতেই পারেননি পাহাড়ি… যাই হোক।
আমার বক্তব্য হল, এই যে নিজের সিরিয়ালজাত খ্যাতি, এটাকে ব্যবহার করে মাচায় মাচায় গান গাওয়ার নাম করে টাকা রোজগার করা, একে ভদ্র ভাষায় কি বলে জানেন? অশ্লীলতা বলে… বেলেল্লাপনা বলে… যেখানে সুযোগের অভাবে হাজার হাজার শিল্পী না খেতে পেয়ে মরছে, অসাধারণ কন্ঠ, অসাধারণ সাধনা শুধু সুযোগ আর তৈলমর্দনের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেখানে একজন মাচায় উঠে হেঁড়ে গলায় চিৎকার করল, আর সেটা আমাকে মেনে নিতে হবে? একজন অভিনেত্রী, বাচ্চা মেয়ে বলে হাততালি দিতে হবে ?
না…
পারলাম না… তাই এই নোংরামির, আমি প্রতিবাদ করব, ট্রোল করব, একশবার, হাজারবার… হাসাহাসি করব, লোকের কাছে বলব,
-“ওই মেয়েটা বা*র মত গায়… কিচ্ছু গাইতে পারে না…”
(অ)শান্তির আশায়…
নীল…
দিতিপ্রিযা ভালো অভিনেত্রী সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। উচ্চারণ গুলো তখনকার সময় মতো করার চেষ্টা হয়েছে। তাতেও তার দোষ নেই। কিন্তু গান সে জানেনা। তার গাইবার দরকের কি মশাই। কিছু লোক সে গান শুনে হাততালি দিয়েছে। তারা তো গান বোঝেনা। সব মানুষকে সব কিছু পারতে হবে তার কি কোনো মানে আছে। zee বাংলার প্রচারে গেছো বলে গানই গাইতে হবে?
LikeLiked by 1 person