Cherry Bomb – First Installment

প্রথম পরিচ্ছেদ – রি-ইউনিয়ন

বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করছিল না সমৃদ্ধার; সকাল থেকে মা ডেকে গেছে অন্তত ৩ বার। আর আদিত্যও ফোন করেছে বেশ কয়েকবার। পাশ ফেরা অবস্থাতে ফোনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে শুধু রিংটোনের শব্দ শুনে গেছে… ধরতে ইচ্ছে করেনি…

কাল সন্ধের পর থেকে কারোর সাথে কথা বলতে, কারোর মুখ দেখতে ইচ্ছে করছে না তার। সারারাত চোখের জলে বালিশ ভিজিয়েও যেন আবার কান্না বেরিয়ে আসছে বুক ফেটে…

আদিত্যর কথাগুলো কানে ভাসছে এখনো…

-“এটা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই, সমু এ দায়, দায়িত্ব, সবই আমার; ওই পরিবেশে নিয়ে গিয়ে তোর মুখের হাসি আমি মুছে দিতে পারব না

আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে সমৃদ্ধা;

-“আমি পারবো না তোকে ছাড়া একটা জীবন আমার পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব নয়। এভাবে আমি

-“তোর কি মনে হয়, সমু, আমিও পারব? আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখ একবার

আদিত্যর মুখের দিকে তাকাতে পারেনি সমৃদ্ধা। কাল গোটা রাস্তা গাড়িতেও না। চুপ করে বসে থেকে থেকে চোখের জল মুছেছে, একটা কথাও বলেনি। বাড়ির দরজায় নামার পর ফিরে তাকিয়েছে, আদিত্যর গাড়িটা বেরিয়ে যাওয়ার পর। গাড়ির টেইললাইট আর অতি পরিচিত নাম্বার প্লেটের দিকে তাকিয়ে আবার ডুকরে কেঁদে ফেলেছে।

২৭ বছরের এই জীবনে বোধহয় এত লম্বা রাত আর আসেনি সমৃদ্ধার। রাতেও কয়েকবার ফোন করেছিল আদিত্য। উত্তর না পেয়ে শেষে এস-এম-এস করে ‘বাড়ি পৌছে গেছি, গুড নাইট…’

সারারাত ঘরের দরজা বন্ধ করে পৃথিবীটাকে পর করে দিতে চেয়েছে সে… মা দরজা ধাক্কালে বলেছে খিদে নেই, খাবেনা। সকালে দরজাটা খুললেও, বিছানা ছাড়েনি… ছাড়তে ইচ্ছে করছিল না… যে পৃথিবী থেকে নিজেকে আলাদা করতে চেয়েছিল, সেই পৃথিবীর ভার যেন তার ওপর চেপে বসেছে।

-“তোর কি হয়েছে বলবি কি ? এখনো ওঠার নাম নেই ?”

মা ঘরে ঢুকে প্রশ্ন করে। দুটো হাত কোমরে, একটা যুদ্ধং দেহী মানসিকতা নিয়ে এসে খাটের পাশে দাঁড়িয়েছে মা।

এবার তাড়াতাড়ি উঠে বসে সমৃদ্ধা…

-“কিছু না মা… একটু গা ম্যাজ ম্যাজ করছিল, তাই…”

-“আমাকে মিথ্যা কথা বলাটা এবার বন্ধ কর…”

এবার দুজনেই মুখ খুলে কিছু একটা বলতে যায় কিন্তু, তার আগেই কর্কষ শব্দে বেজে ওঠে মোবাইলটা। কথা এড়ানোর এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর পাবে না বুঝে তাড়াতাড়ি হাত বাড়িয়ে ফোনটা টেনে নেয়। পল্লবী ফোন করেছে;

ফোনটা কানে দিয়ে হ্যালো বলতে, মা উঠে দাঁড়ায়। ফোনের অজুহাতে মায়ের কাছে সমস্যা লুকোনোর অভ্যাসটা তার অনেকদিনের।

-“হ্যাঁ রে বল…”

-“বল মানে ? কোথায় তুই ?”

-“আমি… মানে…”

-“প্লিজ বলিস না যে তুই এখনো বেরোসনি…”

-“ও হ্যাঁ… মানে না… আমি জাস্ট বেরোলাম…”

-“তাড়াতাড়ি কর, মাথামোটা কোথাকার…”

এবার লাফ মেরেই বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে বলে ওঠে সমৃদ্ধা

-“মা, আমি বেরোলাম… আজ পল্লবীদের সাথে মিট ছিল… ভুলেই গেছিলাম… এসে কথা বলছি…”

মা এক মিনিট চুপ করে থাকে; তারপর বলে ওঠে-

-“রিয়া, আমি কিন্তু তোর মা… বাবা নই… ভুলে যাস না…”

মায়ের গলা বুজে আসে, চোখের জলটা চাপতে পিছনে ঘুরে যায়। রিয়া, মানে সমৃদ্ধা পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে মাকে, সে ও কেঁদে ফেলে।

-“তোমার গা ছুঁয়ে বলছি মা, সব বলব, প্লিজ, বিলিভ মি। কোনোদিন কিচ্ছু লুকিয়েছি তোমার থেকে ? ভুল বুঝো না প্লিজ… বাড়ি ফিরে সব বলব…”

মা মেয়ের দিকে ফেরে, ছলছল চোখে; সমৃদ্ধা মায়ের কপালে চুমু খায়;

-“প্লিজ কান্না থামাও…”

মা ঠোঁটের কোণে একটা হাসি টানার চেষ্টা করে চোখের জল মোছে।

-“তুই তৈরী হ, আমি ব্রেকফাস্ট দিচ্ছি টেবলে…”

পরের আধঘন্টায় স্নান আর প্রাতরাশ সেরে উবর-এ ওঠা অবধি, আদিত্যর কথা মনে পড়েনি। ক্যাবে বসে সবার আগে আর মনে পড়ল স্কুলের কথা। পল্লবী ক্রমাগত ফোন করে গালাগালি দিচ্ছিল। কাল রাতের ঘটনার পর সমৃদ্ধা বেমালুম ভুলে গেছিল যে আজ সাউথ সিটিতে তাদের স্কুলের বন্ধুদের মিট, মানে প্রায় বছর ছয়েক পরে, আবার দেখা হচ্ছে।

cute-friendship-girls-love-perfect-Favim.com-437220

তারা চার বন্ধু, মানে সে, পল্লবী, রাগেশ্রী আর সঞ্চারী। এদের মধ্যে পল্লবীর সাথে যদিও মাঝে মধ্যেই দেখা হয় তার। কিন্তু সঞ্চারী আর রাগেশ্রীর সাথে বহুদিন পর হচ্ছে।

সঞ্চারী চিরকালই একটু মাথাগরম, এবং যুক্তিবাদী। স্কুলের নিয়ম মানার থেকে ভেঙেছে বেশী। একবার টিফিন পিরিয়ডের পর ফিজিক্স ক্লাসে দেরী করে ঢোকার দরুন স্যার বলেছিলেন

-“তোমার টাইমে কি সবাইকে চলতে হবে নাকি ?”

সঞ্চারী হেসে বলেছিল

-“স্যার, টাইম তো সবার জন্য আলাদা… আমি তাড়াহুড়ো করলে আমার ঘড়ি স্লো হয়ে যাবে; রিলেটিভিটি পরেননি ?”

স্যারও এর উত্তরে কিছু বলতে পারেন নি…

চারজনের মধ্যে ডানাকাটা পরীর তকমা একমাত্র সঞ্চারীকেই দেওয়া যায়। তাই ছেলেদের প্রেমপত্র পাওয়ার আর তার উত্তরে থাপ্পর দেওয়ার ব্যাপারে সঞ্চারীর বিশ্বরেকর্ড থাকাটা অসম্ভব নয়।

রাগেশ্রীকে খুব একটা পচ্ছন্দ হত না সমৃদ্ধার। ছোটবেলা থেকেই বড্ড লোকদেখানো স্বভাব। আর অন্যদের ছোট করা। ওর বাবার মাইনে থেকে ওর মায়ের গয়না, সব ব্যাপারেই বড্ড দেখনদারি ছিল। আর যেটা অনেক মেয়েদেরই থাকে, মানে বড্ড ছেলে ছেলে বাতিক।

পল্লবী শান্ত নয়, কিন্তু সঞ্চারীর মতো মারকুটেও নয়। ক্লাসের ফার্স্টগার্ল হিসাবে সবারই প্রিয়পাত্রী ছিল সে, আর সমৃদ্ধার যাকে বলে ‘বিএফএফ’।

সমৃদ্ধা ছোটবেলা থেকেই চুপচাপ। ছেলেদের ধারে কাছেও ঘেঁষত না। সঞ্চারীর মতো সুন্দরী না হলেও, সে একেবারে ফেলনা ছিল না। প্রেমপত্র সেও পেয়েছে। কিন্তু নিরবে এড়িয়ে যেত। শুধু আদিত্যই…

না… আজ না… এখন না। আর আদিত্যর কথা ভেবে কাঁদবে না সমৃদ্ধা। বন্ধুদের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে; আপাতত সে মুক্ত… একা… সুখি…!!!?

To be Continued…

P.S. – Call Me Crazy, Mad… Whatever! but a Bengali Story Named “Cherry Bomb” needs some explanation. Actually, this whole idea of the story originated from the American Rock Song by “The Runaways” called… Ya, you guessed right, “Cherry Bomb”...

“Hello, daddy. Hello, mom.
I’m your ch-ch-ch-cherry bomb!
Hello world! I’m your wild girl.
I’m your ch-ch-ch-cherry bomb!”

I think I have a very different definition of ‘Wild Girl’ and ‘Cherry Bomb’ and wanted to just express that, with the story as my medium…

I hope Y’all like it!

Needless to Say –

“All Characters in this Story is Imaginary, and all similarities with real persons and incidents should be treated as mere coincidence”

Here’s a link if you want to listen to the song…

Cherry Bomb – The Runaways

3 thoughts on “Cherry Bomb – First Installment

  1. Pingback: Cherry Bomb – Second Installment – Libberish

  2. Santiram Karmakar

    প্রথম খণ্ড পড়েই গল্প সম্বন্ধে মতামত দিলাম না, তবে যেটা দেখে খারাপ লাগলো সেটা হলো শেষে ইংলিশ অংশটা দেখে…এটাও বাংলা হলে লেখার গুরুত্ব আরো বেশি হতো…এটা আমার মনে হলো…

    Like

    1. আসলে গল্পটার ‘ঘোষণা’টা ইংলিশ এ করেছিলাম তো, তাই ওই অংশটাও ইংলিশে রেখেছি… ☺️

      Like

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.